Saturday, February 27, 2016

My Sweet Mother

৩৩৫ পীরেরবাগ, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ আমার নানা বাড়ি।
আজ ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখ আমার বয়স মাত্র ১ মাস ২ দিন।
মাঝ রা্তে বাবা এবং মামনির মাঝে শোবার পর থেকেই কেন যেন বারবার আমি মামনির দিকে ঘুরে তাকিয়ে ছিলাম।
বাবা মাঝে মাঝে আমাকে টেনে তার দিকে টেনে নিচ্ছিল কিন্তু আমি আবার ঘুরে মামনির দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

শুকতারা

মাগো আমার সোনামণি আমার চোখের আলো
জানিস না তুই তোকে আমি কতই বাসি ভালো।।

তুই যে আমার জীয়ন কাঠি আমার পথের দিশা
দেখলে তোকে মন জুড়ায় আর কাটে অমানিশা,
তোরই ছায়া যেন আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলো।।

তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি অনেক বড় হবি
সবার চোখে একে দিবি মন জুড়ানো ছবি,
তোরই সাথে যেন ঘড়ে চাদের কণা এলো।।
                      (মামনিকে নিয়ে লেখা তার বাবা আমার ভাইয়ার কবিতা)

আমার মামনি এবং বাবার বিয়ের সময় লন্ডনে উপস্থিত আমার ৩ নানা, নানু ও খালার ছবি (২৫.১০.২০০৮)।

২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখ সকালে একটু ঘুমিয়েছি তখন মামনি আমাক রেখে উঠে এসে ডাইনিং টেবিলে বসে নানুর সাথে চা দিয়ে রুটি নাশতা খেয়ে সকাল ৭টায় ঘরে আমার কাছে আসার সময় দরজা পেরিয়ে ভিতরে ঢোকার সময় মাথা ঘুরে পরে গেল। সাথে সাথে নানু চিতকার করে সবাইকে ডেকে এনে তারাতারি  বাড়ির পাশের CNG ড্রাইভার রাসেলকে ডেকে এনে সহরোয়ার্দি cardiac হাসপাতালে নিয়ে গেল। ওখানে ওরা পরীক্ষা করে দেখল আমার মামনি cardiac attack এ ততক্ষনে ইন্তেকাল করেছে। আমি মাতৃহারা হয়ে গেলাম।
আমার বাবা নানা ভাইয়াকে বলল আমার রাফসানের কি হবে?
নানা ভাইয়া বলল-কেন আমি আছি না! ওর নানু আছে, আর খালামনিরা আছে না! তুমি ভাবছ কেন?
সবাই নানা জায়গায় ফোন করে আত্মিয়স্বজনদের জানিয়ে দিল।
মেঝখালু ওখান থেকে একটা এমবুলেন্স ডেকে মামনিকে বাড়ি নিয়ে আসল।
নানা ভাইয়া স্থানিয় সবাইকে ডেকে মসজিদে ঘোষনা দিয়ে দিল। বাবার সাথে আলাপ করে বাদ জোহর মামনির জানাজার ব্যবস্থা করল। কাফনের কাপর কেনা এবং মামনিকে গোরস্থানে নেয়ার জন্য ট্রাক ভাড়া করার জন্য রাসেল এবং বাবুকে পাঠিয়ে দিল। এর মধ্যে সংবাদ পেয়ে আমার মামারা সবাই একে একে এসে হাজির হলো।  নানা ভাই মেঝ মামাকে (তুহিন) মিরপুর বুদ্ধিজীবি গোরস্থানে পাঠিয়ে দিল মামনির কবর খোড়া এবং অন্যান্য ব্যবস্থার জন্য। ঘরে সবাইকে কোরয়ান ও দোয়া ইউনুস পড়ার নির্দেশ দিয়ে মামনির গোসলের ব্যবস্থা করতে গেলেন। মসজিদে ঘোসনা দেয়ার পর কুরয়ান খতমের কাজ শুরু হলো। একটু পরে চট্টগ্রাম থেকে আমার বড়বাবা জানালেন তিনি এবং আমার দাদু ও ফুফু প্লেনে করে আসছেন।
মামনি কেন যেন কয়েকদিন আগা থেকেই নানুকে বলছিল আমি না থাকলে তুমি আমার ময়নামতিকে একটু বড় করে তানিয়ার কাছে দিও ও ওকে মায়ের স্নেহ মমতা দিয়ে বড় করবে। মামনির কথামত আমার নানা ভাই মেঝ খালামনিকে বলে দিল আজ থেকে এই ছেলেও তোমার, তুমি রিজভান ও রাফসান ওদের দুইজনের মামনি। 
জানাজার সময় মসজিদে অনেক মানুষ হয়েছিল। এলাকার সবাই এবং আমার ও আমার মামনির প্রায় সকল আত্মীয় স্বজন , আমার বাবা, খালু এবং নানা ভাইয়ার সহকর্মি ও বন্ধুরা সহ অনেক মানুষ এসে পরল। প্রায় সবাই কাদছে কিন্তু আমি নানুর কোলে শুয়ে আছি কিছুই বুঝতে পারছি না কারণ আমার বয়স মাত্র এক মাস তিন দিন।
জানাজার আগে দাদু, ফুফু এবং বড় বাবা এসে পৌছাল। তারা মামনিকে দেখে এসে আমাকে কোলে নিল।
জানাজা পড়ে মামনিকে গোরস্থানে নিয়ে গেল। নানা ভাইয়া, বাবা আর আমার মামনির ছোট ও বড় মামা মামনিকে কবরে নামিয়ে দিল।
পরদিন নানা ভাই আর একবার কুরয়ান খতম করাল, বাবা, মেঝ খালু এবং মেঝ মামা জুম্মার নামাজ পড়ে মামনির কবরে নামফলক লাগিয়ে এসেছে। বিকেলে বাদ আসর মিলাদ পড়ালো। মিলাদে মামনির পছন্দের মিষ্টি, আমির্তি এবং পনিরের সিঙ্গারা দিয়ে তবারক দেয়া হয়েছে। মিলাদ পড়ে নানা ভাই আর তার কলিগ রকিব ভাইয়া মামনির কবর জিয়ারত করে এলো।
 আমার মামনি, মতিঝিল AGB Colony, Dhaka
 পশুর নদী, মংলা বন্দর থেকে সমুদ্রে যাবার পথে জাহাজ।
  আমার মামনি এবম্নগ নানু, মতিঝিল AGB Colony, Dhaka
মংলা বন্দরের হিরন পয়েন্ট রেস্ট হাউস প্রাঙ্গন, সুন্দরবন
আমার নানুর গ্রামের বাড়ি
  আমার মামনি, মতিঝিল AGB Colony, Dhaka
আমার মামনি, বড় নানুর গ্রামের বাড়ি, গোপিনাথপুর, মানিকগঞ্জ।
আমার মেঝ খালামনি, মংলা বন্দরের এক অনুষ্ঠানে।
আমার বড় মা, নানা এবং মামনি।
আমার ভাইয়ার ছোটবেলা করাচি শহরে এবং জোনাকবাতির বিয়ের পরে মতিঝিলে।
আমার ভাইয়া আর মেঝ নানা, করাচী চিড়িয়াখানা।
আমার ছোট খালামনি, মংলা।
আমার ভাইয়া, দুবাই আউটার এঙ্কোরেজ। নিচে আমার জোনাকবাতি।

আমার মেঝ খালামনি, মংলা।
আমার জোনাকবাতি (মাঝে) এবং তার বড় বোন ও ভাই।
আমার দুই খালামনি, মংলা।
আমার ছোট খালামনি, মংলা।
আমার জোনাকবাতি, তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের ছয়ানি গালা গ্রামে।
আমার মামনি এবং জোনাকবাতি।
আমার মামনি।
আমার মামনি এবং মেঝ খালামনি, সুন্দর বনে যাবার পথে পশুর নদী।

মেঝ ও ছোট খালামনি
আমার দুই খালামনি।
আমার ভাইয়া আর ছোট খালামনি, মংলা।
আমার ভাইয়া আর জোনাকবাতি, মংলা পশুর নদীর পাড়ে।

মংলা পশুর নদীর পাড়ে আমার মামনি এবং তার বাবা মা বোন।
ামার মেঝ খালামনি এবং আমার তাফদিল মামা।


আমার ভাইয়া এবং জোনাকবাতি।
আমার জোনাকবাতির বাবা মা, মানিকগঞ্জের গোপীনাথপুর গ্রাম।
আমার ভাইয়া এবং গফুর ভাইয়া, ব্রিজেন্ড, সাউথ ওয়েলস।
আমার ভাইয়া, কার্ডিফ।
 আমার মামনি, লন্ডনে তার বাসায়।

আমার মামনি, লন্ডন মাদাম তসো।




মামনি, isle of man, England.




মামনি at Gloucester, England

নিচে মামনি আর সুমি খালামনি, মংলা পশুর নদীর পাড়ে।






লন্ডনে মামনির বিয়ের সময় যারা সমস্ত ব্যবস্থা করেছে, বাম থেকে-কেয়া খালামনি, জলি খালামনি (মামনির প্রাইমারি স্কুলের বান্ধবী), ঝুমুর খালামনি ও মহুয়া খালামনি।



মামনি ও সাড়া খালামনি (মামনির চাচাত বোন)




(লন্ডনে মামনি ও বাবার বিয়ের ছবি)
এখানে আরও অনেক ছবি আছে 

নিচে মামনির লেখা কবিতা 
মা
মিষ্টি ছোট্ট কথা
শুনতে ভাল লাগে
সে যে আমার মা
সোনা মনি মা।।

ছোট্ট সবুজ ঘাসের ফুল
দুলছে হাওয়ায় দোদুলদুল
দেখতে সে যে মায়ের মত
লাগছে আহা মন্দ না।।

স্নেহ মায়ায় সারাক্ষণ
ভরা থাকে মায়ের মন
ক্ষমা গুনে সেরা সে
মা যে আমার অনন্যা।।
তানজিমা খালিদ সোহেলি, আমার মামনি।
আমার মামনি মিরপুর বুদ্ধিজিবী গোরস্থানে এখানে ঘুমিয়ে আছে।

2 comments:

  1. কমেন্ট করার মত অত শক্তি আমার নেই।

    ReplyDelete
    Replies
    1. কমেন্ট করা লাগবে না শুধ আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার জন্যেও দোয়া করবেন যেন আমি আমার মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।

      Delete